রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
সমকাল : বাবা মায়ের পাশেই বুধবার চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর (৬৫)। গত ৬ জুলাই ক্যান্সার রোগে ভুগে তিনি রাজশাহীর মহিষবাথান এলাকায় তার বোনের ক্লিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে থাকায় এতদিন মরদেহ সমাহিত না করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিলো। তার ছেলে এন্ড্রু জুনিয়র সপ্তক গত ৭ জুলাই এবং মেয়ে সংজ্ঞা গত ১৩ জুলাই দেশে ফিরেছেন।
এন্ড্রু কিশোরের দুলাভাই ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস জানান, এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ এখন হিমঘরে রয়েছে। সেখান থেকে বুধবার সকাল ৯টায় মরদেহ বের করে নগরীর চার্চ অব বাংলাদেশে নিয়ে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করা হবে। এরপর সকাল ১১টার দিকে এই চার্চের নিজস্ব কবরস্থানে নেওয়া হবে। সেখানে তার বাবা-মায়ের সমাধি আছে। সেখানে জনসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ কিছুক্ষণ রাখা হবে। দুপুর ১ টার দিকে মরদেহ সমাহিত করা হবে।
এর আগে, এন্ড্রু কিশোরকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ সকাল ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মরদেহ খুব ভাল নেই। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ঠিকমত ছিলো না। এ অবস্থায় দুর্গন্ধ হতে পারে। একারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, করোনার কারণে আমরা চাই না অনেক লোকজন উপস্থিত হোক। করোনায় রাজশাহীর অবস্থা ভাল নেই। বেশি মানুষ এসে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক তা আমরা চাই না। যত কম লোক উপস্থিত হবেন, ততটাই সবার জন্য মঙ্গল হবে।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। প্রাথমিকভাবে সঙ্গীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে যান। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
এন্ডু কিশোরের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমেরও কাঙ্গাল’ প্রভৃতি। সঙ্গীতে স্বীকৃতি স্বরুপ ৮ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply